দেশের প্রথম মনোরেল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক)। নগরের ক্রমবর্ধমান যানজট নিরসনে এই আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা করছে চসিক। এই প্রকল্প বাস্তবায়নে এগিয়ে এসেছে জার্মানি ও মিশরের যৌথ উদ্যোগে গঠিত ওরাসকম ও আরব কন্ট্রাক্টর গ্রুপ।
রোববার (১ জুন) নগরীর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারে চসিক ও বিদেশি এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (MoU) স্বাক্ষরিত হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চসিক মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, ওরাসকম ও আরব কন্ট্রাক্টর গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তারা, নগরের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
চুক্তি অনুযায়ী, ওরাসকম ও আরব কন্ট্রাক্টর গ্রুপ প্রথম ধাপে মনোরেল প্রকল্পের সম্ভাব্যতা যাচাই (ফিজিবিলিটি স্টাডি) শুরু করবে।
চসিক কর্মকর্তারা জানান, মনোরেল হলো একধরনের আধুনিক গণপরিবহন ব্যবস্থা, যা সাধারণত একক রেলপথের ওপর এবং উঁচু পিলারে স্থাপন করা হয়। এটি তুলনামূলকভাবে কম জায়গায় স্থাপনযোগ্য হওয়ায় ঘনবসতিপূর্ণ শহরের জন্য উপযুক্ত। মেট্রোরেলের তুলনায় মনোরেল প্রযুক্তির খরচ প্রায় ৪০ শতাংশ কম। যদিও এর যাত্রী ধারণক্ষমতা কিছুটা কম, তবে এটি দ্রুত নির্মাণযোগ্য এবং যানজট নিরসনে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।
বর্তমানে জাপান, চীন, দক্ষিণ কোরিয়া, মালয়েশিয়া ও ভারতের বিভিন্ন শহরে মনোরেল সফলভাবে চালু রয়েছে।
চসিক সূত্রে আরও জানা গেছে, এর আগে ২০২১ সালেও বিদেশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠান চসিককে মনোরেল নির্মাণের প্রস্তাব দিয়েছিল। তারা তৎকালীন মেয়রের সঙ্গে একাধিকবার বৈঠক করলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দিকে এগোয়নি। তবে এবার নতুন মেয়রের নেতৃত্বে সেই উদ্যোগ বাস্তব রূপ পেতে যাচ্ছে বলে সংশ্লিষ্টরা আশাবাদী।
চট্টগ্রামের মতো একটি বাণিজ্যিক ও জনবহুল শহরের জন্য মনোরেল একটি যুগান্তকারী উদ্যোগ হতে পারে। এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে—
- শহরের যানজট কমবে
- নাগরিকদের যাতায়াতে গতি ও স্বাচ্ছন্দ্য বাড়বে
- পরিবেশবান্ধব ও প্রযুক্তিনির্ভর গণপরিবহন অবকাঠামো গড়ে উঠবে
তবে সফল বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজন হবে সঠিক পরিকল্পনা, সময়মতো কাজ সম্পন্ন করা এবং পর্যাপ্ত বাজেট ও সরকারি সমন্বয়। এই প্রাথমিক চুক্তি দেশের আধুনিক পরিবহন ব্যবস্থার পথে একটি বড় পদক্ষেপ হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে।