
বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে পৃথক সচিবালয় গঠনের পক্ষে জোরালো মত দিয়েছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তিনি বলেন, “পৃথক সচিবালয় বাস্তবায়ন হলে বিচার বিভাগ স্বায়ত্তশাসিত হবে, হস্তক্ষেপমুক্ত থাকবে এবং জবাবদিহিতা নিশ্চিত হবে।”
রবিবার বিকেলে ঢাকার একটি হোটেলে আয়োজিত ‘জুডিশিয়াল ইন্ডিপেন্ডেন্স অ্যান্ড এফিসিয়েন্সি’ বিষয়ক জাতীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ।
বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইন উপদেষ্টা ড. আসিফ নজরুল, অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান, অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন, ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন এবং ইউএনডিপির প্রতিনিধি স্টিফান লিলার।
ড. ইউনূস বলেন, “বিগত সময়গুলোতে বিচার বিভাগ যথাযথ স্বাধীনতা পায়নি। সেই ঘাটতি পূরণে সংস্কার দরকার। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হলে অবশ্যই পৃথক সচিবালয়ের বিকল্প নেই।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান আমাদের রাষ্ট্র সংস্কারে এক ঐতিহাসিক সুযোগ এনে দিয়েছে। এই সুযোগ যেন হারিয়ে না যায়। জুলাই শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্য আমাদের অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে।”
তিনি মনে করিয়ে দেন, “আসন্ন জুলাই গণঅভ্যুত্থানের এক বছর পূর্তি উদযাপন আমাদের জন্য তাৎপর্যপূর্ণ। তরুণদের আত্মত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে হলে আমাদের সেই সংস্কারের ধারাকে এগিয়ে নিতে হবে যা বাস্তব পরিবর্তন আনবে।”
তিনি বলেন, “জুলাই অভ্যুত্থান ক্ষমতা পরিবর্তনের জন্য হয়নি, এটি ছিল গভীর সামাজিক অবিচার ও বৈষম্যের বিরুদ্ধে গণমানুষের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। আমাদের সংস্কারের লক্ষ্য হলো এমন একটি সমাজ গড়া যেখানে ন্যায়বিচার, স্বাধীনতা ও সম্মান নিশ্চিত হয়।”
ড. ইউনূস আরও বলেন, “আমরা ৫৪ বছর ধরে যেসব কাজ করতে পারিনি, এখন সেই সুযোগ এসেছে। শক্তিশালী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় প্রয়োজন সাহসী ও কার্যকর সংস্কার।”