ভুল চিকিৎসা ও প্রতারণার অভিযোগে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হেলালের পরিবারের মামলা দাবি

ভুল চিকিৎসা ও প্রতারণার অভিযোগে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে হেলালের পরিবারের মামলা দাবি

রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক এবং ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল কাকরাইলের কনসালটেন্ট ডা. কে এম আতিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ভুল চিকিৎসা ও প্রতারণার অভিযোগ তুলেছে ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের (ডিপিডিসি) কর্মকর্তা হেলাল উদ্দিনের পরিবার। তাদের দাবি, চিকিৎসা অবহেলার ফলে ৩৫ বছর বয়সী হেলালের মৃত্যু হয়েছে।

বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে হেলালের স্ত্রী সামেনা আক্তার, বোন উম্মে ছাবেরীন স্মৃতি ও অন্যান্য স্বজনরা অভিযোগ করেন, ডা. আতিক অর্থলোভে অপ্রয়োজনীয় ও ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশন করিয়ে হেলালের জীবন কেড়ে নিয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, হেলালের এমআরআই রিপোর্টে একটি ছোট পিটুইটারি টিউমার ধরা পড়ে। ১২ জুলাই ডা. আতিক নাক দিয়ে এন্ডোস্কপিক সার্জারির পরামর্শ দেন, যা তিনি ‘মাইনর অপারেশন’ এবং ঝুঁকিমুক্ত বলে দাবি করেন। দ্রুত অপারেশন না করলে চোখ অন্ধ হয়ে যাওয়ার ভয় দেখিয়ে ২ লাখ ৬০ হাজার টাকার প্যাকেজ মূল্য ধার্য করেন।

১৪ জুলাই হেলাল ভর্তি হলেও প্যাকেজ সুবিধা পাননি; বরং অতিরিক্ত সার্জন ফি ও হাসপাতাল বিল দিতে হয়। রক্তচাপ বেশি থাকা সত্ত্বেও ১৫ জুলাই অপারেশন করা হয়। অপারেশনের পর ডা. আতিক জানান, এটি ‘মেজর অপারেশন’ হয়েছে এবং দুটি টিউমার অপসারণ করা হয়েছে—যা পূর্ববর্তী রিপোর্টের সঙ্গে মেলে না। এছাড়া অপারেশনের পর টিউমারের নমুনা তাৎক্ষণিকভাবে বায়োপসিতে পাঠানো হয়নি।

অপারেশনের পর হেলালের শারীরিক অবস্থা অবনতি হলেও সঠিক পর্যবেক্ষণ ও চিকিৎসা দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন স্বজনরা। ১৭ জুলাই রাতে মাথায় ড্রেন লাগানো হলেও অ্যানেস্থেশিয়া ব্যবহার করা হয়নি। ১৮ জুলাই সকালে শ্বাসকষ্ট শুরু হলেও সময়মতো আইসিইউতে নেওয়া হয়নি। সকাল ১১টা ৫৪ মিনিটে আইসিইউতে নেওয়ার পর হেলালের মৃত্যু হয়।

পরিবার অভিযোগ করে, বিল পরিশোধ না করা পর্যন্ত লাশ আটকে রাখে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে ১ লাখ ৩০ হাজার ৬৫০ টাকা নেওয়ার পর লাশ হস্তান্তর করা হয়।

হেলালের স্ত্রী সামেনা আক্তার বলেন, “দুটি সন্তান নিয়ে আমি এখন অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। ভুল চিকিৎসা ও প্রতারণার জবাব চাই।” বোন ছাবেরীন স্মৃতি জানান, “দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হলে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।”

স্বজনদের দাবি, ডা. আতিক ইচ্ছাকৃতভাবে উন্নত চিকিৎসা কেন্দ্রে পাঠাননি এবং ব্যক্তিগত আর্থিক স্বার্থে ভুল অপারেশন করেছেন। তারা তার লাইসেন্স বাতিল ও আইনগত শাস্তি দাবি করেছেন।

অভিযোগের বিষয়ে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও ডা. আতিকুল ইসলামের কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *