ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আশাবাদী দিল্লি

ভারত-যুক্তরাষ্ট্র বাণিজ্য চুক্তি নিয়ে আশাবাদী দিল্লি

ভারত-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও গভীর করতে চলমান আলোচনার বিষয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। তিনি জানান, দুই দেশের মধ্যে শুল্ক স্থগিতাদেশের মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই একটি পারস্পরিক সুবিধাজনক বাণিজ্য চুক্তি চূড়ান্ত করার চেষ্টা চলছে।

ফরাসি পত্রিকা লে ফিগারো-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জয়শঙ্কর বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত নতুন শুল্ক নীতিমালার আগেই ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র আলোচনায় বসেছিল। তিনি উল্লেখ করেন, গত ফেব্রুয়ারিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও ট্রাম্পের মধ্যে বৈঠকে উভয় দেশের বাজার উন্মুক্ত করার বিষয়ে সম্মতি হয়েছিল।

জয়শঙ্কর জানান, “আমরা আশাবাদী যে, ৯ জুলাইয়ের আগে একটি কার্যকর চুক্তিতে পৌঁছানো সম্ভব হবে।” এর আগে দিল্লিতে একাধিক রুদ্ধদ্বার বৈঠকে মার্কিন প্রতিনিধিদল ভারতীয় বাণিজ্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছে।

রয়টার্সকে দেওয়া এক বিবৃতিতে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ভারতীয় কর্মকর্তা বলেন, সাম্প্রতিক আলোচনাগুলো গঠনমূলক হয়েছে এবং একটি লাভজনক ও ভারসাম্যপূর্ণ সমঝোতার দিকে অগ্রগতি হয়েছে।

বর্তমানে দুই দেশের বার্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় ১৯০ বিলিয়ন ডলার। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের প্রায় ৪৫ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে ভারতের সঙ্গে, যা ট্রাম্প প্রশাসন হ্রাস করার চেষ্টা করেছিল।

ভারত ইতোমধ্যেই কিছু পণ্যের শুল্ক কমিয়েছে, যেমন বোরবন হুইস্কি ও মোটরসাইকেল, কিন্তু কৃষি খাতের মতো সংবেদনশীল ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়ার সম্ভাবনা কম বলেই মনে করা হচ্ছে। এদিকে, উভয় দেশ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ৫০০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত উন্নীত করার লক্ষ্যে কাজ করছে।

এছাড়াও, যুক্তরাষ্ট্র চায় তাদের বাণিজ্যিক অংশীদাররা দ্রুত সেরা প্রস্তাব নিয়ে আসুক। গত সপ্তাহে মার্কিন বাণিজ্য সচিব হাওয়ার্ড লুটনিকও ভারত-যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি নিয়ে আশাবাদ প্রকাশ করেছেন।

তবে মে মাসে ট্রাম্পের দাবি ছিল, ভারত নাকি আমেরিকান পণ্যের উপর থেকে সব শুল্ক প্রত্যাহারে রাজি হয়েছে। এ দাবিকে তৎক্ষণাৎ খণ্ডন করে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জয়শঙ্কর বলেন, আলোচনা এখনো চলছে এবং কিছু চূড়ান্ত হয়নি।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “যেকোনো চুক্তি হবে পারস্পরিক স্বার্থে এবং উভয় দেশের জন্যই কার্যকর।”

ট্রাম্প প্রশাসনের নীতির ব্যাপারে জয়শঙ্কর মন্তব্য করেন, “আমেরিকা তাদের স্বার্থকে গুরুত্ব দিচ্ছে – আমি হলে আমিও সেটাই করতাম।”

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *