
মিয়ানমারভিত্তিক সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান আর্মি-র কাছে অবৈধভাবে ইয়াবা ও আইসের মতো মাদকের বিনিময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন খাদ্যসামগ্রী, ওষুধ, জ্বালানি ও সার পাচার হচ্ছে। সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো এই অবৈধ লেনদেনকে এক ধরনের ‘বিনিময় প্রথা’ বলে উল্লেখ করেছে।
এই চক্রটি পাচারের রুট হিসেবে গভীর সামুদ্রিক এলাকা ব্যবহার করছে। এসব পণ্য ও মাদকের পাশাপাশি মানব পাচারের কাজেও এই চক্রটি জড়িত।
সীমান্ত-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই অবৈধ পাচার রুটের কয়েকটি চিহ্নিত করা হয়েছে এবং সেখানে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের নাগরিকদের ধরতে বিভিন্ন বাহিনী সমন্বিত অভিযান চালাচ্ছে।
সম্প্রতি কক্সবাজার ও সংলগ্ন সামুদ্রিক এলাকায় পরিচালিত অভিযানে পাচারকারীদের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ আলু, ওষুধ, সিমেন্ট, জর্দা, শীতলপাটি ও লুঙ্গিসহ বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়েছে। এই পণ্যগুলো কোনো ধরনের শুল্ক পরিশোধ ছাড়াই অবৈধভাবে মিয়ানমারে যাচ্ছিল।
- ৬ সেপ্টেম্বর: সেন্টমার্টিনের কাছে একটি ট্রলার থেকে চারশ বস্তা আলু ও ৪০ বস্তা রসুন জব্দ করে কোস্টগার্ড।
- ৪ সেপ্টেম্বর: নাজিরারটেক এলাকায় একটি ফিশিং বোট থেকে ১৯৮ বস্তা সিমেন্ট, পেরেক ও ওষুধসহ বিভিন্ন সামগ্রী জব্দ করা হয়।
- ৩০ আগস্ট: একই এলাকায় একটি সন্দেহজনক ট্রলার ধাওয়া করে ছয় লাখ টাকা মূল্যের ৮৭ বস্তা আলু ও ৯০০টি শীতলপাটি জব্দ করা হয়।
- ২৯ আগস্ট: পতেঙ্গা এলাকায় প্রায় সাড়ে ৫১ লাখ টাকা মূল্যের ৬২০ বস্তা ডাল, আদা ও লুঙ্গিসহ পণ্যসামগ্রী পাচারের সময় সাতজনকে আটক করা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, আরাকান আর্মির মূল আয়ের উৎস হলো মাদক। সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান বলেন, এই চোরাচালান চক্র আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা ও সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য মারাত্মক হুমকি। বিজিবি, কোস্টগার্ড ও নৌবাহিনী সমন্বিতভাবে এই পাচার বন্ধে কাজ করে যাচ্ছে।
বর্তমানে মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্যের প্রধান রুট টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া বন্ধ রয়েছে।