
এশিয়া কাপের ৪১ বছরের ইতিহাসে এই প্রথমবার ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে ক্রিকেট বিশ্বের দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দেশ ভারত ও পাকিস্তান। বহুল প্রতীক্ষিত এই ‘মহারণ’ নিয়ে যেমন তীব্র রোমাঞ্চ, তেমনি রয়েছে বিতর্ক এবং মাঠের বাইরের আলোচনা নিয়ে শঙ্কা। সবচেয়ে বড় প্রশ্ন—২২ গজের ক্রিকেটীয় লড়াই জয়ী হবে, নাকি আগের ম্যাচগুলোর মতো মাঠের বাইরের বিষয়ই আলোচনার কেন্দ্র দখল করে নেবে।
শক্তিমত্তার আলোচনায় পরিসংখ্যান এখন পর্যন্ত ভারতের পক্ষেই। চলতি বছর দুবাইয়ে তিনবার মুখোমুখি হয়েছে দুই দল—প্রতিবারই হার্দিক পান্ডিয়া ও শুভমান গিলদের দল শেষ হাসি হেসেছে।
- চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (ওয়ানডে): ভারত ৬ উইকেটে জয়ী।
- এশিয়া কাপ (গ্রুপপর্ব, টি-টোয়েন্টি): ভারত ৭ উইকেটে জয়ী।
- এশিয়া কাপ (সুপার ফোর, টি-টোয়েন্টি): ভারত ৬ উইকেটে জয়ী।
এই এশিয়া কাপের ১৭তম আসরে এখনো কোনো দল ভারতকে হারাতে পারেনি। অন্যদিকে, পাকিস্তান ৬ ম্যাচের মধ্যে দুটিতেই হেরেছে, এবং প্রতিবারই প্রতিপক্ষ ছিল ভারত। তবে ‘আনপ্রেডিক্টেবল’ পাকিস্তান চমক দেখাতে পারে কি না, সেই নিশ্চয়তা এখনই দেওয়া যাচ্ছে না।
ফাইনালে ভারতকে হারানোর ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী পাকিস্তানের অধিনায়ক সালমান আলি আগা। তিনি বলেন, “পাকিস্তান-ভারতের ম্যাচ মানেই চাপ। যদি বলি কোনো চাপ নেই, সেটা ভুল হবে। আমরা তাদের চেয়ে বেশি ভুল করেছি বলেই জিততে পারিনি। যদি আমরা কম ভুল করি, তাহলে ম্যাচ আমাদের হবে। ইনশাআল্লাহ, কাল আমাদের জয় দেখবেন।”
অন্যদিকে, পাকিস্তানের সঙ্গে সুপার ফোরের লড়াই শেষে ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব কথিত ‘রাইভালরি’ আর অবশিষ্ট নেই বলে মন্তব্য করেন। তিনি দম্ভ প্রকাশ করে বলেন, “আমার মনে হয় আপনাদের ভারত-পাকিস্তান লড়াই নিয়ে এবার প্রশ্ন করা বন্ধ করা উচিত।… একটা দলের পক্ষে যদি স্কোরলাইন ১৩-০, ১০-১ হয়, তাহলে এখন আর এটা কোনো লড়াই নয়।”
মাঠের পারফরম্যান্সের পাশাপাশি ফাইনালের আগে বিতর্কও তুঙ্গে উঠেছে। ভারতীয় ক্রিকেটাররা পাকিস্তান ম্যাচে ‘নো হ্যান্ডশেক’ ধারা অনুসরণ করছেন, যা নিয়ে পাকিস্তান টুর্নামেন্ট থেকে নাম প্রত্যাহারের হুমকি দিয়েছিল। পরে সালমান আগার দল মাঠে ফিরলেও এই ধারা এখনও বলবৎ আছে।
এছাড়াও, ফাইনাল ম্যাচের আগে নির্ধারিত ফটোশ্যুটও বয়কট করেছে ভারত। অন্যদিকে, পাকিস্তানও তাদের আগের দুই ম্যাচের আগে নির্ধারিত সংবাদ সম্মেলন বাতিল করেছিল। সূর্যকুমারের মতো ভারতীয় অধিনায়কের ‘রাজনৈতিক ভাষায়’ বক্তব্য এবং হারিস রউফ-ফারহানদের ইঙ্গিতপূর্ণ উদযাপনও বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।
তবে ক্রিকেট ভক্তদের চাওয়া—মাঠের বাইরের বিতর্ক যেন খেলার কেন্দ্রবিন্দু না হয়। বরং শাহিন আফ্রিদি বনাম অভিষেক শর্মা, জাসপ্রিত বুমরাহ বনাম ফখর জামান, শাহিবজাদা ফারহান বনাম কুলদীপ যাদবের মতো তারকাদের ব্যক্তিগত দ্বৈরথ প্রাধান্য পাক, যাতে জয় হয় ক্রিকেটেরই।