
সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) রাতে বাংলাদেশ আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ দল (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, দেশের ওপর ধেয়ে আসছে একটি শক্তিশালী মৌসুমি বৃষ্টিবলয় ‘প্রবাহ’। মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) রাত থেকে শুরু হয়ে আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের প্রায় ৮০ শতাংশ এলাকায় এর প্রভাব বিস্তার হতে পারে। চলতি বছরের এটি ১৩তম এবং একটি ‘প্রায় পূর্ণাঙ্গ বৃষ্টিবলয়’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা নির্দিষ্ট কিছু এলাকায় অতিরিক্ত সক্রিয় হয়ে উল্লেখযোগ্য বৃষ্টিপাত ঘটাবে। এই বৃষ্টিবলয় চলাকালীন দেশের আকাশ অধিকাংশ এলাকায় মেঘলা থেকে মেঘাচ্ছন্ন থাকতে পারে এবং টানা বৃষ্টির কারণে আবহাওয়া আরামদায়ক ও ঠাণ্ডা অনুভূত হবে।
‘প্রবাহ’ বৃষ্টিবলয়টি দেশের পশ্চিম, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও দক্ষিণাঞ্চলে বেশি সক্রিয় থাকবে। এর সক্রিয়তার ভিত্তিতে দেশের বিভাগগুলোকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়েছে:
- সর্বাধিক সক্রিয়: রংপুর, রাজশাহী, খুলনা, ময়মনসিংহ ও বরিশাল বিভাগ। এই অঞ্চলগুলোতে একটানা ও দীর্ঘস্থায়ী বর্ষণ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
- বেশ সক্রিয়: ঢাকা বিভাগ।
- মাঝারি সক্রিয়: সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগ।
বিডব্লিউওটি জানিয়েছে, বৃষ্টিবলয়টি ৩০ সেপ্টেম্বর দেশের পূর্বাঞ্চল দিয়ে প্রবেশ করবে এবং ৬ অক্টোবর রংপুর বিভাগ হয়ে দেশ ত্যাগ করতে পারে। এর সর্বাধিক সক্রিয়তা দেখা যেতে পারে ২ থেকে ৪ অক্টোবর। এই বৃষ্টিবলয় চলাকালীন দেশের প্রায় ৬০-৭০ শতাংশ এলাকায় পানি সেচের চাহিদা পূরণ হতে পারে।
ভারি বৃষ্টিপাতের কারণে বেশ কিছু সতর্কতা জারি করা হয়েছে, যা সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে:
নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি ও বন্যা: উজানে ভারি বর্ষণের ফলে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের নদ-নদীগুলোর পানি সমতল বেশ বাড়তে পারে। ফলে এই অঞ্চলের নদ-নদীর নিকটবর্তী নিম্নাঞ্চল সাময়িকভাবে প্লাবিত হতে পারে। এছাড়াও দেশের বেশ কিছু এলাকায় নিম্নাঞ্চলে সাময়িক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
সাগর ও ঝোড়ো হাওয়া: বৃষ্টিবলয় প্রবাহ চলাকালীন সাগরে নিম্নচাপ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে সাগর বেশিরভাগ সময়ই উত্তাল থাকতে পারে এবং এই সময়ে সাগরে যাওয়া নিরাপদ নয়। দেশের উপকূলীয় এলাকার ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৬০ কিলোমিটার বেগে দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
বজ্রপাত ও পাহাড়ধস: প্রথম দিকে অধিকাংশ এলাকায় প্রায় তীব্র বজ্রপাতের আশঙ্কা রয়েছে, যা পরে হালকা থেকে মাঝারি হতে পারে। ভারি বৃষ্টির কারণে কক্সবাজার, রাঙ্গামাটি, বান্দরবান ও চট্টগ্রামের পাহাড়ি এলাকায় পাহাড় ধসের ঝুঁকি থেকে যায়। সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর স্থানীয় প্রশাসনকে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।