
বাংলাদেশের সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরীর যুক্তরাজ্যে থাকা কিছু সম্পদ বিক্রির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব সম্পদ বিক্রি করে তাঁর ঋণদাতাদের পাওনা পরিশোধ করা হবে।
ব্রিটিশ দৈনিক টেলিগ্রাফ-এর তথ্যমতে, সাইফুজ্জামানের মালিকানাধীন ছয়টি আবাসন কোম্পানি দেশটির প্রশাসনিক তত্ত্বাবধানে চলে গেছে। এই কোম্পানিগুলোর মাধ্যমে তিনি যুক্তরাজ্যে শতাধিক সম্পত্তি পরিচালনা করতেন। তদন্তে জানা যায়, দেশটিতে তাঁর মোট তিন শতাধিক বাড়ি, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে, যার আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ১৭ কোটি পাউন্ড। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ উপায়ে অর্থ পাচার করে এসব সম্পদ কেনা হয়েছে।
বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষের অনুরোধে গত জুনে ব্রিটেনের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি (এনসিএ) তাঁর বেশ কিছু সম্পদ জব্দ করে। জব্দ হওয়া সম্পদের মধ্যে রয়েছে নর্থ লন্ডনের সেন্ট জনস উড এলাকায় ১১ মিলিয়ন পাউন্ডের একটি বিলাসবহুল বাড়ি এবং সেন্ট্রাল লন্ডনের ফিটসরোভিয়া অঞ্চলের একাধিক ফ্ল্যাট।
বর্তমানে যুক্তরাজ্যের সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান গ্র্যান্ট থর্নটন এসব সম্পদের একটি অংশ বিক্রির দায়িত্ব পেয়েছে। বিক্রির জন্য নির্ধারিত সম্পদের মধ্যে রয়েছে লন্ডন ও ইংল্যান্ডের দক্ষিণ–পূর্বাঞ্চলের বিভিন্ন আবাসিক ভবন। এসব বিক্রির মাধ্যমে পাওয়া অর্থ সিঙ্গাপুরভিত্তিক ডিবিএস ব্যাংক, ব্রিটিশ আরব কমার্শিয়াল ব্যাংকসহ ঋণদাতাদের পরিশোধ করা হবে।
যুক্তরাজ্যের কোম্পানিজ হাউস-এ জমা দেওয়া নথিতে দেখা গেছে, বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকও তাঁর কাছ থেকে প্রায় ৩৫ কোটি মার্কিন ডলারের সমমূল্যের অর্থ ফেরত চাইছে।
গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দেশ–বিদেশে আওয়ামী লীগ–ঘনিষ্ঠ ব্যক্তিদের অবৈধ সম্পদ অনুসন্ধান শুরু করে। এই প্রক্রিয়ায় সাইফুজ্জামান চৌধুরীর পাশাপাশি সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান এফ রহমান ও ভাতিজা আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের লন্ডনের সম্পদও এনসিএ জব্দ করেছে।