
বন্দিদের শুধুই অপরাধী হিসেবে না দেখে তাদের সমাজের অংশ হিসেবে ভাবার আহ্বান জানিয়েছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। তিনি বলেছেন, কারাগারে আসা মানুষদের সংশোধন ও সমাজে ফিরে যাওয়ার সুযোগ দিতে হবে। জেলখানায় তাদের এমন পরিবেশ তৈরি করতে হবে, যেখানে তারা আত্মশুদ্ধির মাধ্যমে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে পারেন।
বৃহস্পতিবার ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন। উপদেষ্টা জানান, কারাগারে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। একজন ধর্মীয় শিক্ষক কয়েদি ও হাজতিদের নিয়মিত ধর্মীয় শিক্ষা দিয়ে থাকেন এবং বন্দিদের মধ্য থেকেও কিছু ব্যক্তি এ শিক্ষাদানে সম্পৃক্ত আছেন।
তিনি বলেন, “কারাগারের চাহিদা অনুযায়ী আমরা আরও ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দেব। শুধু মুসলিম নয়, হিন্দু বন্দিদের ধর্মীয় চর্চার সুযোগও নিশ্চিত করা হবে।”
ধর্ম উপদেষ্টা আরও জানান, কারাগারের নিরাপত্তাজনিত কারণে অভ্যন্তরে মসজিদ বা মন্দির নির্মাণ সম্ভব না হলেও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ধর্মীয় চর্চার উপযোগী পরিবেশ তৈরির জন্য কারা কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করা হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে জায়নামাজ, ধর্মীয় বই ও প্রয়োজনীয় উপকরণ ধর্ম মন্ত্রণালয় সরবরাহ করবে।
তিনি এ সময় কারাগারের বিভিন্ন কার্যক্রম, যেমন কেন্দ্রীয় মক্তব, হিফজ শাখা, লাইব্রেরি, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, রন্ধনশালা ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ঘুরে দেখেন এবং বন্দিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে কারা মক্তব চালু হয়। বর্তমানে এখানে ১২টি মক্তব চালু আছে। ২০২৫ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত এ মক্তবগুলো থেকে ৮,২২২ জন বন্দি আরবি শিক্ষা ও ২,৪৭০ জন কুরআন শিক্ষা লাভ করেছেন। ইতোমধ্যে প্রায় ২,৫০০ বার কুরআন খতম হয়েছে।
পরিদর্শনকালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আঃ ছালাম খান, আইজি (প্রিজন) সৈয়দ মোঃ মোতাহের হোসেন, এআইজি (প্রিজন) জাহাঙ্গীর কবির, সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তারসহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।