
আফতাব নগর ও বনশ্রীর মধ্যে সহজ যোগাযোগ স্থাপনের লক্ষ্যে ঢাকার নড়াই নদীর উপর দুটি সেতু নির্মাণ করা হবে বলে জানিয়েছেন ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ। আজ শনিবার বনশ্রী খালপাড় এলাকায় “ময়লা পরিষ্কার ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির” উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই ঘোষণা দেন।
প্রশাসক জানান, বর্তমানে আফতাব নগর থেকে বনশ্রীতে যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম হলো প্রধান সড়ক। তাই জনসাধারণের সুবিধার্থে নদীর উপর দুটি সেতু নির্মাণ করা হবে, যেগুলোর নাম প্রস্তাবিত হয়েছে “নড়াই সেতু”।
তিনি বলেন, “যে জলাশয়কে আমরা আজ বনশ্রী খাল হিসেবে জানি, তা আশির দশকে ছিল প্রবাহমান নড়াই নদী। অবৈধ দখলের ফলে নদীটি খালে পরিণত হয়। আমাদের উদ্যোগে পানি উন্নয়ন বোর্ড একে পুনরায় ‘নড়াই নদী’ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।”
প্রশাসক আরও আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “নড়াই নদীর প্রবাহ পুনরুদ্ধার করা গেলে ভবিষ্যতে রামপুরা থেকে নৌপথে শীতলক্ষ্যা, ধলেশ্বরী ও বালু নদী হয়ে সদরঘাট ও মিরপুর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন চালু করা সম্ভব হতে পারে।”
অনুষ্ঠানে আরও জানানো হয়, গুলশান, বনানী ও বারিধারা লেক এলাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি মাস্টারপ্ল্যান প্রণয়নাধীন। প্রশাসক ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “চাঁদাবাজ সিন্ডিকেটের কারণে ঢাকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিঘ্ন ঘটছে এবং ফুটপাত দখলমুক্ত করাও চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
বৃক্ষরোপণ কর্মসূচির উদ্বোধনী বক্তব্যে প্রশাসক বলেন, “শুধু গাছ লাগালেই হবে না, গাছের পরিচর্যা নিশ্চিত করতে হবে অন্তত দুই থেকে তিন বছর। তবেই টেকসই সবুজ পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
তিনি খালে ময়লা না ফেলার বিষয়ে জনসচেতনতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়ে বলেন, “শহর আমাদের সবার, এর সৌন্দর্য ও পরিবেশ আমাদেরই রক্ষা করতে হবে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সমমনা পরিষদ, বনশ্রীর সভাপতি মো. শাহবুদ্দিন শিকদার। বনশ্রীর নানজিং কমিউনিটি সেন্টার থেকে শুরু করে খালপাড় এলাকায় ময়লা পরিষ্কার ও বৃক্ষরোপণ অভিযান পরিচালনা করা হয়। স্থানীয় বাসিন্দা, স্বেচ্ছাসেবক ও ডিএনসিসির পরিচ্ছন্নতা বিভাগের সদস্যরা সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।
এই ধরনের পরিবেশবান্ধব উদ্যোগ শুধু স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করছে না, বরং সম্মিলিত নাগরিক অংশগ্রহণের একটি ইতিবাচক সংস্কৃতিও গড়ে তুলছে।