
সখিনা বেগমের জন্ম কিশোরগঞ্জের নিকলীর গুরুই গ্রামে। বাবা সোনাফর মিয়া ও মা দুঃখী বিবির মেয়ে সখিনা ছিলেন নিঃসন্তান। স্বামী কিতাব আলীর মৃত্যু হয় মুক্তিযুদ্ধের আগেই। পরিবারের কেউ না থাকায় তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে ভাগ্নি ফাইরুন্নেছা আক্তারের সঙ্গে বাজিতপুরের বড়মাইপাড়া গ্রামে বসবাস করছিলেন।
সখিনা বেগম ছিলেন ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের এক সাহসী যোদ্ধা। যুদ্ধকালীন সময়ে তিনি রাজাকারদের গতিবিধি নজরে রেখে খবর পাঠাতেন মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে। একপর্যায়ে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হাতে আটক হলেও তিনি কৌশলে পালিয়ে আসেন। পালানোর সময় সঙ্গে নিয়ে আসা একটি ধারালো দা দিয়েই নিকলীর পাঁচ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করেন তিনি। সেই দা বর্তমানে ঢাকার মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে সংরক্ষিত রয়েছে। তার ভাগ্নে মতিউর রহমান মুক্তিযুদ্ধে সম্মুখযুদ্ধে শহীদ হন, যা সখিনাকে প্রতিশোধপরায়ণ করে তোলে। এরপর তিনি সরাসরি রাজাকার নিধনে অংশ নেন।
বীর মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম (৯৩) বার্ধক্যজনিত কারণে ইন্তেকাল করেছেন। মঙ্গলবার (১৭ জুন) ভোর ৫টায় বাজিতপুর উপজেলার হিলচিয়া ইউনিয়নের বড়মাইপাড়া গ্রামে ভাগ্নির বাড়িতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মঙ্গলবার আসরের নামাজ শেষে গুরুই ঈদগাহ মাঠে তার জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। পরে তাকে পারিবারিক কবরস্থানে শাহী মসজিদের পাশে দাফন করা হয়।