
ইরানে ইসরায়েলি হামলা অব্যাহত থাকায় দেশটির রাজধানী তেহরানে অবস্থানরত বাংলাদেশ দূতাবাসসহ প্রবাসী বাংলাদেশিরা ঝুঁকির মুখে পড়েছেন। বিশেষ করে, তেহরান ইউনিভার্সিটির পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রের কাছাকাছি অবস্থান করায় বাংলাদেশ দূতাবাস ভবন বর্তমানে মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ বলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সোমবার সকালে তেহরান থেকে পাঠানো সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, দূতাবাস ভবনের এক কিলোমিটারের মধ্যে দুটি সংবেদনশীল স্থাপনা রয়েছে, যেগুলো ইসরায়েলি হামলার লক্ষ্যবস্তু। এর ফলে দূতাবাস, কর্মকর্তাদের আবাসস্থল এবং তাদের পরিবারগুলোকে দ্রুত নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
তবে রাজধানী তেহরানের আশেপাশে নিরাপদ আবাসন খুঁজে পাওয়া কঠিন হওয়ায়, তাদেরকে শহরের বাইরে ৩০-৪০ কিলোমিটার দূরে সরিয়ে নেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে দূতাবাসের কার্যক্রম অন্য দেশে স্থানান্তরের বিষয়েও সরকার চিন্তাভাবনা করছে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা জানান, তেহরানে অবস্থানরত প্রায় দুই হাজার বাংলাদেশির মধ্যে অধিকাংশই শহরের বাইরে চলে গেছেন এবং এখন পর্যন্ত নিরাপদে আছেন। তবে তেহরানে এখনো শতাধিক বাংলাদেশি রয়েছেন, যাদের মধ্যে আছেন রাষ্ট্রদূত, কর্মকর্তা, কর্মচারী, শিক্ষার্থী এবং পেশাজীবীরা। গত ১৩ জুন দেশে ফেরার কথা থাকলেও বিমান চলাচল বন্ধ থাকায় অন্তত ২৮ জন আটকা পড়েছেন।
সরকারের বিভিন্ন সূত্রের তথ্য অনুযায়ী, ইরানের বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে থাকা বাংলাদেশির সংখ্যা প্রায় ৬০০, যারা দীর্ঘদিন ধরে সেখানে বসবাস করছেন। এ ছাড়া প্রায় ৮০০ বাংলাদেশি অবৈধভাবে কাজ করছেন, ২০০ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করছেন এবং মানবপাচারের কারণে ৩০০ থেকে ৫০০ জন বাংলাদেশি ট্রানজিট অবস্থায় রয়েছেন।
পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে বাংলাদেশ সরকার এবং বিপদের আশঙ্কা দেখা দিলে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।