নতুন বাংলাদেশের পথে জাপানের সহযোগিতা কামনা প্রধান উপদেষ্টার

টোকিও, ৩০ মে ২০২৫:
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস শুক্রবার জাপানি বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন তারা বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় আরও দৃঢ়ভাবে অংশগ্রহণ করেন।

টোকিওতে সফরের তৃতীয় দিনে আয়োজিত এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ আহ্বান জানান। আলোচনায় অংশ নেন বাংলাদেশে আগ্রহী এবং সক্রিয় জাপানি কোম্পানির উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।

তিনি বলেন, “আপনাদের উপস্থিতি আমাদেরকে সাহস ও আশার বার্তা দেয়।”

তিনি আরও বলেন, “গত ১০ মাসে আমরা ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন বিষয়কে একত্রিত করার চেষ্টা করেছি—এতে জাপানের সহায়তা ছিল অত্যন্ত মূল্যবান।”

স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের ক্ষতিকর প্রভাব উল্লেখ করে ইউনূস বলেন, “বাংলাদেশ যেন এক নতুন প্রাণ ফিরে পেয়েছে, কিন্তু এখনও আমরা স্বস্তির শ্বাস নিতে চাই।”

তিনি বলেন, “বর্তমানে আমাদের জাপানের সমর্থন অতীব জরুরি, কারণ আমরা এক নতুন বাংলাদেশ গড়ার প্রতিশ্রুতি নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি।”

পুরনো ব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা থেকে সরে আসার ইচ্ছার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা আগের সেই বাংলাদেশের পথ থেকে সরে নতুন এক সম্ভাবনার দরজা খুলতে চাই।”

বাংলাদেশের বিভিন্ন ঘাটতির বিষয়ে তিনি আশাবাদ প্রকাশ করে বলেন, “এই ঘাটতি দ্রুত কাটিয়ে উঠা সম্ভব, এবং আমরা চাই এই দুর্দশা অতীত হয়ে যাক।”

জেট্রোর চেয়ারম্যান নরিহিকো ইশিগুরো বলেন, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশ বিনিয়োগ ও প্রবৃদ্ধির অনন্য সম্ভাবনার দেশ হিসেবে উঠে এসেছে।

জেবিসিসিইসি ও মারুবেনি কর্পোরেশনের পরিচালক ফুমিয়া কোকুবু বলেন, বাংলাদেশে কর্মরত ৮৫ শতাংশ জাপানি কোম্পানি আশা করছে যে চলতি বছর ইকোনমিক পার্টনারশিপ চুক্তি (EPA) সই হবে।

তিনি আরও বলেন, “বর্তমান করনীতি সংস্কার হলে বিনিয়োগ আরও সহজ হবে।”

জাপানের রাষ্ট্রদূত শিনিচি সাইদা বলেন, অন্তর্বর্তী সরকার অর্থনীতিকে অগ্রাধিকার দিয়েছে এবং চলমান কোনো প্রকল্প বা ব্যবসা স্থগিত করেনি।

অন্যান্য আলোচকরা ছিলেন:

  • শিংগো উয়েনো, সিইও, সুমিতোমো কর্পোরেশন
  • মিতসুরু ইজুমো, সিইও, ইউগলেনা কোম্পানি
  • স্টিভেন উইন, গ্লোবাল স্ট্র্যাটেজিস্ট, জেরা
  • কাজুনোরি ওগাওয়া, সিনিয়র ডিরেক্টর, জেবিআইসি
  • শিগেয়োশি ওনডা, প্রেসিডেন্ট, অনোডা ইনক
  • কাজুয়া নাকাজো, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, জেট্রো
  • মায়ুমি মুরায়ামা, এক্সিকিউটিভ ভাইস প্রেসিডেন্ট, আইডিই-জেট্রো

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকি আলোচনার শেষ বিবৃতি উপস্থাপন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *