দীর্ঘ সময় ধরে অর্থ না পাওয়ায় বেসরকারি এমপিওভুক্ত শিক্ষক ও কর্মচারীরা অবসর এবং কল্যাণ সুবিধার জন্য অপেক্ষা করছেন। বর্তমানে প্রায় ৮৫ হাজার আবেদন নিষ্পত্তির অপেক্ষায় রয়েছে। অর্থ সংকট ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এই পরিস্থিতি আরও জটিল হয়েছে। এসব আবেদনের বিপরীতে যে অর্থ প্রয়োজন, তাতে বোর্ডে ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা।
এই সংকট লাঘবে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগকে ২২০০ কোটি টাকা বরাদ্দে সম্মতি দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। গত ২৪ মে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব শাহরিয়ার জামিল স্বাক্ষরিত দুটি সম্মতিপত্র শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়।
সেখানে বলা হয়, অবসর সুবিধা বোর্ডের জন্য ২০০০ কোটি টাকা বন্ড আকারে এবং কল্যাণ ট্রাস্টের জন্য ২০০ কোটি টাকা অনুদান হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। উভয় খাতের অর্থ ‘স্থায়ী তহবিল’ ও ‘মূলধন তহবিল’ হিসেবে ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করার শর্তে দেওয়া হয়েছে।
অবসর সুবিধা বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, শিক্ষক-কর্মচারীদের থেকে ৬ শতাংশ হারে মাসে প্রায় ৭৫ কোটি টাকা চাঁদা আদায় হয়, আর এফডিআর থেকে আয় হয় ৫ কোটি টাকা—মোট মাসিক আয় ৮০ কোটি টাকা, যা বার্ষিক ৯৬০ কোটি। কিন্তু মাসিক ব্যয় ১২০ কোটি টাকা হওয়ায় বাৎসরিক ঘাটতি হয় ৪৮০ কোটি টাকা। বর্তমানে প্রায় ৪৫ হাজার আবেদন নিষ্পত্তিহীন এবং তা নিষ্পত্তিতে প্রয়োজন ৫ হাজার কোটি টাকা।
অন্যদিকে কল্যাণ ট্রাস্টের আওতায় থাকা প্রায় ৪০ হাজার আবেদন নিষ্পত্তিতে প্রয়োজন ৩৭০০ কোটি টাকা। এই ট্রাস্ট পরিচালিত হয় শিক্ষক-কর্মচারীদের ৪ শতাংশ চাঁদার অর্থে। ভবিষ্যতে যাতে আর এ ধরনের জটিলতা না হয়, তার জন্য প্রতি বছর অবসর বোর্ডে ৫০০ কোটি এবং কল্যাণ ট্রাস্টে ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দ থাকলে বিষয়টির স্থায়ী সমাধান সম্ভব বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।