টোকিও, ২৮ মে ২০২৫ – বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাপানের টোকিওতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে আগামী বছরের জুন মাসের মধ্যেই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু সাধারণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দৃঢ় অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছেন।


বুধবার, চার দিনের সফরের প্রথম দিন, টোকিওর ইম্পেরিয়াল হোটেলে জাপানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং জাপান-বাংলাদেশ পার্লামেন্টারি ফ্রেন্ডশিপ লিগের (জেবিপিএফএল) প্রেসিডেন্ট তারো আসোর সঙ্গে সাক্ষাতে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের সরকার সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন – এই তিনটি প্রধান অগ্রাধিকার নিয়ে কাজ করছে।” তিনি আরও জানান, “ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা, বৈদেশিক রিজার্ভ বৃদ্ধি এবং ঋণ পরিশোধে আমরা ইতিবাচক অগ্রগতি অর্জন করেছি।”
তারো আসো বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণে ইউনূসের ভূমিকার প্রশংসা করেন এবং একটি স্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এ সময় ইউনূস বলেন, “যুব সমাজের অনুরোধে আমি এই দায়িত্ব নিয়েছি। পূর্ববর্তী সরকার রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর যে ক্ষতি করেছে, তা পুনর্গঠন করাই এখন মূল চ্যালেঞ্জ।”
সফর প্রসঙ্গে ইউনূস বলেন, “জাপান আমাদের সর্বাত্মক সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে। তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাতেই আমি এসেছি।”
বৈঠকে জাপানি আইনপ্রণেতারা বলেন, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে প্রস্তাবিত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে সহায়ক হবে। তারা আশা প্রকাশ করেন, চলতি আগস্টের মধ্যেই আলোচনা সম্পন্ন হয়ে সেপ্টেম্বরে ইপিএ স্বাক্ষরিত হবে, যা জাপানকে বাংলাদেশের সঙ্গে প্রথম ইপিএ স্বাক্ষরকারী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউনূস বলেন, “এই সংকট অন্যান্য শরণার্থী সংকট থেকে ভিন্ন। তারা তাদের নিজ জন্মভূমিতে ফিরে যেতে চায়। আমরা জাপানের সহানুভূতি ও সহায়তা প্রত্যাশা করি।”
প্রধান উপদেষ্টা আসোকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান এবং চলমান সংস্কার কার্যক্রম সরেজমিনে দেখার আহ্বান জানান।
বৈঠকে পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকী এবং এসডিজি সমন্বয়কারী লামিয়া মোর্শেদ উপস্থিত ছিলেন।