শতাধিক আত্মঘাতী ড্রোন বহনে সক্ষম চীনের নতুন যুদ্ধবিমান

চীন সামরিক শক্তি প্রদর্শনের নতুন দিগন্তে প্রবেশ করেছে। দেশটি তৈরি করছে এমন একটি উড্ডয়নক্ষম আকাশযান (ইউএভি), যা একসঙ্গে ১০০টি আত্মঘাতী ড্রোন (কামিকাজে ড্রোন) উৎক্ষেপণ করতে পারবে। অত্যাধুনিক এই যুদ্ধযানটির নাম জিউ তিয়ান (Jiu Tian)। এটি শুধু ড্রোন বহনেই সক্ষম নয়, বরং অন্যান্য ক্ষেপণাস্ত্র ও সামরিক সরঞ্জাম পরিবহণেও পারদর্শী।

চীনের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যমের বরাতে টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, জিউ তানের চতুর্থ প্রোটোটাইপের কাঠামো সম্প্রতি সম্পন্ন হয়েছে, এবং বর্তমানে চলছে ইনস্টলেশন ও পরীক্ষামূলক প্রস্তুতি। আগামী মাসেই আকাশে প্রথমবারের মতো উড্ডয়ন করবে এটি।

চীনের শানজি আনম্যানড ইকুইপমেন্ট টেকনোলজি প্রতিষ্ঠান এই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন ড্রোনবাহী যুদ্ধবিমানটি তৈরি করছে। গত বছরের নভেম্বরে দেশটির বৃহত্তম বিমান প্রদর্শনী ঝুহাই এয়ার শোতে এটি প্রথমবারের মতো প্রকাশ্যে আনা হয়।

২৫ মিটার ডানার বিস্তারবিশিষ্ট এই ইউএভিটি টানা ১২ ঘণ্টা উড়তে পারে, এবং এর সর্বোচ্চ পাল্লা ৭,০০০ কিলোমিটার—অর্থাৎ এটি দূরবর্তী লক্ষ্যবস্তুও আঘাত হানতে সক্ষম।

এই আকাশযানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো, একসঙ্গে ১০০টি কামিকাজে ড্রোন নিক্ষেপের ক্ষমতা। বিশ্লেষকদের মতে, এতে প্রতিপক্ষের প্রতিক্রিয়া জানানো কঠিন হয়ে পড়বে। ড্রোনগুলোর এই ঝাঁক নজরদারি, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, পুনরুদ্ধার এবং আক্রমণের কাজে ব্যবহারযোগ্য।

জিউ তান আকাশযানটি আরও বহন করতে পারে ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্রমাঝারি পাল্লার PL-12F এয়ার টু এয়ার মিসাইল। এটি ৪৯,০০০ ফুট উচ্চতায় উড়তে পারে, যা একে বেশিরভাগ রাডার সিস্টেমের ধরাছোঁয়ার বাইরে রাখবে।

বিশেষজ্ঞদের ধারণা, তাইওয়ান নিয়ে চীন-যুক্তরাষ্ট্র উত্তেজনা বাড়তে থাকলে, এই আকাশযান বড় ধরনের কৌশলগত ভূমিকা রাখতে পারে। এর সক্ষমতা চীনের বিমানবাহিনীর আধুনিকায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন হিসেবে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *