শ্রম অধিকার ও সংস্কারে ঐক্যমত প্রধান তিন দলের: জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সাথে নৈশভোজ আলোচনা

শ্রম অধিকার ও সংস্কারে ঐক্যমত প্রধান তিন দলের: জাতিসংঘে ড. ইউনূসের সাথে নৈশভোজ আলোচনা

বাংলাদেশের শ্রম আইন, শ্রমিকদের অধিকার এবং দেশে চলমান সংস্কার প্রচেষ্টা নিয়ে আলোচনা করতে জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে একটি উচ্চ পর্যায়ের নৈশভোজ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল বুধবার (২৫ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত এই আয়োজনে বাংলাদেশের কূটনীতিক, জাতিসংঘের কর্মকর্তা এবং সিনিয়র রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা অংশ নেন।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া, বাংলাদেশের প্রধান তিনটি রাজনৈতিক দলের নেতারা এতে অংশগ্রহণ করেন এবং শ্রম বিষয়ে উন্মুক্ত ও গঠনমূলক আলোচনায় অবদান রাখেন।

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশে সরাসরি বিদেশী বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে শ্রম সংস্কারের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা তুলে ধরেন। তিনি আগামী ফেব্রুয়ারিতে আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের আগেই আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) কনভেনশনের সাথে সমন্বয় করে প্রধান সংস্কারগুলো বাস্তবায়নের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ দূত লুৎফে সিদ্দিকি পরিচালিত এই আলোচনায় আইএলও-এর মহাপরিচালক এবং জাতিসংঘের বিভিন্ন সংস্থার সিনিয়র প্রতিনিধিরা মন্তব্য করেন।

প্রধান তিনটি দলের রাজনৈতিক নেতারা তাদের অনানুষ্ঠানিক মন্তব্যে গার্মেন্টস শিল্পের গুরুত্বের ওপর জোর দেন এবং চলমান শ্রম খাতের সংস্কারের প্রতি সমর্থন জানান।

মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর (বিএনপি মহাসচিব): তিনি গার্মেন্টস শিল্পকে বাংলাদেশের অর্থনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে বর্ণনা করেন এবং বলেন, ভবিষ্যতে যে কোনো সরকারকে অবশ্যই এর স্থায়িত্বকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। তিনি আইএলও অঙ্গীকার পূরণে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রচেষ্টার স্বীকৃতি দেন।

সৈয়দ আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের (জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির): তিনি গার্মেন্টস শিল্প থেকে তার দলের অনেকের সরাসরি অভিজ্ঞতা তুলে ধরেন। তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার এজেন্ডাকে সমর্থন করেন এবং নির্বাচিত হলে এই সংস্কারগুলি গড়ে তোলার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।

হুমায়ুন কবির (তারেক রহমানের পররাষ্ট্র উপদেষ্টা): তিনি বর্তমান শ্রমিক উদ্যোগের প্রতি বিএনপির প্রশংসা করেন এবং বলেন, যে কোনো নতুন প্রশাসনের অধীনে এই ধরনের প্রচেষ্টা আরও প্রসারিত করা উচিত।

তিন বক্তার মধ্যে একটি সাধারণ বিষয় ছিল—বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত করার জরুরি প্রয়োজন।

ড. তাসনিম জারা, জাতীয়তাবাদী নাগরিক দল (এনসিপি) এর একজন সিনিয়র নেতা, রানা প্লাজা ট্র্যাজেডিকে তার রাজনৈতিক যাত্রার একটি ‘নির্দিষ্ট মুহূর্ত’ হিসেবে স্মরণ করেন এবং নিরাপত্তাহীন শ্রম অনুশীলনের বিরুদ্ধে সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরেন।

চূড়ান্ত মন্তব্যে অধ্যাপক ইউনূস অর্থপূর্ণ এবং দীর্ঘস্থায়ী সংস্কার বাস্তবায়নের জন্য সরকারের সংকল্প পুনর্ব্যক্ত করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *