
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভর্তি উপ-কমিটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য এই সুবিধা চালু করা হয়েছে নির্দিষ্ট ১০টি শর্তের ভিত্তিতে। শর্ত অনুযায়ী, কেবলমাত্র পাশ নম্বর (৪০) পেলেই একটি বিভাগে সর্বোচ্চ দুইজন শিক্ষার্থী পোষ্য কোটায় ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাবেন। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক অধ্যাপক আখতার হোসেন মজুমদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এদিকে, এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সন্ধ্যা পৌনে ৭টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে প্যারিস রোড হয়ে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নেয় এবং ‘কোটা না মেধা, মেধা মেধা’সহ নানা স্লোগান দিতে থাকে।
বিক্ষোভস্থলে শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আল শাহরিয়া শুভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নির্লজ্জভাবে পোষ্য কোটা ফিরিয়ে এনেছে, যা রাকসু নির্বাচনের আগে অশুভ ইঙ্গিত। আমরা এই সিদ্ধান্ত মানি না এবং উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছি।
পরিসংখ্যান বিভাগের মাস্টার্স শিক্ষার্থী রিপন ইসলাম বলেন, পোষ্য কোটা পূর্বে বাতিল হওয়া একটি মীমাংসিত বিষয়। এটি পুনর্বহাল করা শিক্ষার্থীদের প্রতি অবিচার, আমরা এর বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করছি।
ভর্তি উপ-কমিটি যে শর্তে পোষ্য কোটা দেবে তা হলো —
- কেবল রাবির শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানরা আবেদন করতে পারবেন
- প্রাথমিক আবেদনের যোগ্যতা একইভাবে প্রযোজ্য হবে
- মেধার ভিত্তিতে নির্ধারিত আসনের বাইরে অতিরিক্তভাবে ভর্তি হবে
- ভর্তি পরীক্ষার নম্বরের ভিত্তিতে মেধাতালিকা প্রকাশ করা হবে
- ন্যূনতম পাস নম্বর পেতে হবে
- কোনো বিভাগে সর্বোচ্চ ২ জন ভর্তি হতে পারবে
- কর্মরত বিভাগের শিক্ষক-কর্মকর্তারা সন্তানকে সেই বিভাগে ভর্তি করাতে পারবেন না
- ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা নিজেদের মধ্যে অটো মাইগ্রেশনের মাধ্যমে বিভাগ পরিবর্তন করতে পারবেন
- অনিয়ম প্রমাণিত হলে ছাত্রত্ব বাতিল এবং অভিভাবকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে
- এই কোটা সুবিধাভোগীরা আবাসিক হলে সিটের জন্য আবেদন করতে পারবেন না
শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আন্দোলনের সমন্বয়ক অধ্যাপক আব্দুল আলিম বলেন, প্রশাসন এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানায়নি, তবে দাবি আংশিক মানার ইঙ্গিত দিয়েছে। রাকসু নির্বাচনের আগে কোনো চাপ সৃষ্টি না করতে আন্দোলন স্থগিতের বিষয়টি সভায় আলোচনার পর সিদ্ধান্ত হবে।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, ভর্তি উপ-কমিটির বৈঠকে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের শর্তসাপেক্ষে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। এতে অতিরিক্ত উদ্বিগ্ন হওয়ার কিছু নেই, ভর্তি প্রক্রিয়া নির্ধারিত শর্ত মেনেই সম্পন্ন হবে।