
হৃদয়ের সেঞ্চুরি ও রেকর্ড জুটিতে বাংলাদেশের প্রতিরোধ
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির নবম আসরের দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশ লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়েছে, ভারতের বিপক্ষে ২২৯ রানের লক্ষ্য দাঁড় করিয়ে। কঠিন পরিস্থিতিতে ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন তাওহীদ হৃদয়, ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরিতে দলকে বিপদ থেকে টেনে তোলেন।
মাত্র ৩৫ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়া বাংলাদেশকে সামনে এগিয়ে নেওয়ার মূল কারিগর হৃদয়। পাঁচ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে ১১৮ বলে ১০০ রানের ইনিংস খেলেন তিনি, যেখানে ছিল ৬টি চার ও ২টি ছক্কা। ইনিংসের শেষ মুহূর্তে আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত তিনি ছিলেন দলের মূল ভরসা।
হৃদয়ের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে দুর্দান্ত এক পার্টনারশিপ গড়েন জাকের আলি। শূন্য রানে জীবন পাওয়া জাকের চারটি চারে ১১৪ বলে ৬৮ রান করেন। তাদের গড়া ১৫৪ রানের জুটি বাংলাদেশের ওয়ানডে ইতিহাসে ষষ্ঠ উইকেটে সর্বোচ্চ। এর আগে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ১৫০ রানের জুটি গড়েছিলেন জাকের।
জাকেরের ইনিংস শেষ হয় মোহাম্মদ শামির বলে, যখন তিনি লং অনে সহজ ক্যাচ তুলে দেন। এই ক্যাচ ধরে ওয়ানডেতে ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ ১৫৬ ক্যাচ নেওয়ার রেকর্ডে মোহাম্মদ আজহারউদ্দিনের পাশে নাম লেখান বিরাট কোহলি।
হৃদয় ও জাকেরের লড়াকু ইনিংসে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। ২৯তম ওভারে দলীয় সংগ্রহ একশ পেরোলেও দুইশ পেরোতে লেগে যায় ৪৫তম ওভার পর্যন্ত। সেই ওভারে রিশাদ হোসেন ছক্কা হাঁকিয়ে দলকে ২০০ রান ছাড়ানোর দিক নির্দেশনা দেন। তবে রিশাদও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি, ১২ বলে ১৮ রান করে বিদায় নেন।
শেষদিকে তানজিম হাসান সাকিব আউট হয়ে গেলে হৃদয়ের সেঞ্চুরি পাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দেয়। তবে ঠাণ্ডা মাথায় ব্যাটিং করে ১১৪ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করেন তিনি। শেষ ওভারে হার্ষিত রানার বলে শর্ট ফাইন লেগে দুর্দান্ত ক্যাচ নেন শামি, হৃদয়ের ইনিংসও সেখানেই শেষ হয়।
ভারতের সফলতম বোলার ছিলেন মোহাম্মদ শামি, ৫৩ রানে ৫ উইকেট শিকার করেন তিনি। হার্ষিত রানা ৩১ রানে ৩ উইকেট এবং অক্ষর প্যাটেল পান ২ উইকেট।
এর আগে ম্যাচের শুরুতে ভারতের টানা ১১ ম্যাচের জয়রথ থামিয়ে টস জেতে বাংলাদেশ। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নামার পরপরই বড় ধাক্কা খায় টাইগাররা। প্রথম ওভারেই শামির বলে উইকেটের পেছনে সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সৌম্য সরকার (৫ বলে ০)। পরের ওভারে কোহলির হাতে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন শান্ত (২ বলে ০)।
এরপর মিরাজ স্লিপে ক্যাচ দিয়ে আউট হন, এরপর টানা দুই বলে তানজিদ হাসান ও মুশফিকুর রহিমকে কট বিহাইন্ড করেন অক্ষর প্যাটেল। মুশফিক শূন্য রানে ফেরায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে বেশি শূন্য রানে আউট হওয়ার রেকর্ডে যৌথভাবে দুই নম্বরে উঠে যান, যেখানে মাশরাফি বিন মুর্তজার সঙ্গী হয়েছেন তিনি (৩৩ বার)।
অক্ষরের হ্যাটট্রিক হতে পারত, যদি না অধিনায়ক রোহিত শর্মা স্লিপে সহজ ক্যাচ ফেলে দিতেন। সেই জীবন পেয়েই জাকের আলির সঙ্গে ম্যাচ ঘুরিয়ে দেন হৃদয়, দলকে ধ্বংসস্তুপ থেকে টেনে তুলে লড়াইয়ের পুঁজি এনে দেন।